Skip to Content
🎓 English🔤 Grammarশব্দের শ্রেণীবিভাগ

🔖 শব্দের শ্রেণীবিভাগ

বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে শব্দের শ্রেণিবিভাগ হতে পারে।

🔸 উৎসমূলক শ্রেণিবিভাগ : (ক) তৎসম, (খ) অর্ধ-তৎসম (গ) তদ্ভব (ঘ) দেশি ও (ঙ) বিদেশি ।
🔸 গঠনমূলক শ্রেণিবিভাগ : (ক) মৌলিক ও (খ) সাধিত
🔸 অর্থমূলক শ্রেণিবিভাগ : (ক) যৌগিক, (খ) রূঢ়ি এবং (গ) যোগরূঢ়


📌 উৎপত্তিগত শ্রেণিবিন্যাস

বাংলা ভাষার শব্দকে উৎপত্তিগত দিক দিয়ে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে:

  1. তৎসম শব্দ - সংস্কৃত ভাষা থেকে সরাসরি গৃহীত।

🔸 উদাহরণ: চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র, ভবন, ধর্ম, পাত্র, মনুষ্য, জল, মস্তক, অন্ন, গৃহ, চরণ, তৃণ, অগ্রহায়ণ, ভাষা ইত্যাদি।


  1. অর্ধ-তৎসম শব্দ - সংস্কৃত শব্দ কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে গৃহীত।

🔸 উদাহরণ: জ্যোৎস্না ⬅️জোছনা, শ্রাদ্ধ ⬅️ছেরাদ্দ, গৃহিণী ⬅️গিন্নি, বৈষ্ণব ⬅️বোষ্টম, কুৎসিত ⬅️কুচ্ছিত।

বিঃদ্র:-⬅️ চিহ্নের আগের শব্দ গুলোই অর্ধ-তৎসম শব্দ।


  1. তদ্ভব শব্দ - প্রাকৃত বা অপভ্রংশ থেকে পরিবর্তিত হয়ে বাংলা ভাষায় গৃহীত।

    যেমন- হস্ত > হত্থ > হাত; চর্মকার > চম্মআর > চামার।

🔸 উদাহরণ: হাত, পা, কান, জিভ, সাপ, পাখি ইত্যাদি।


  1. দেশি শব্দ - আদিবাসীদের ভাষা থেকে গৃহীত।

🔸 উদাহরণ: কোল, মুণ্ডা, ভীম, খোকা, চাঁপা, কুলা, গঞ্জ, ডাব, ডাগর, টোপর ইত্যাদি। কুড়ি (বিশ) - কোল ভাষা, পেট (উদর) - তামিল ভাষা।


  1. বিদেশি শব্দ - বিভিন্ন বিদেশি ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় আসা শব্দ।

    উদাহরণ:

🔸 আরবি শব্দ: আল্লাহ, ইসলাম, ঈমান, অজু, কোরবানী, কুরআন, কিয়ামত, গোসল, জান্নাত, জাহান্নাম, তওবা, তসবী, যাকাত, হজ্জ, হাদিস, হারাম, হালাল, আদালত, আলেম, ইনসান, ঈদ, উকিল, ওজর, এজলাস, এলেম, কানুন, কলম, কিতাব, কেচ্ছা, খারিজ, গায়েব, দোয়াত, নগদ, বাকি, মহকুমা, মুন্সেফ, মোক্তার, রায় ইত্যাদি।

🔸 ফার্সি শব্দ: খোদা, গুনাহ, দোজখ, নামাজ, পয়গম্বর, ফেরেশতা, বেহেশত, রোজা, কারখানা, চশমা, জবানবন্দি, তারিখ, তোশক, দফতর, দরবার, দোকান, দস্তখত, দৌলত, নালিশ, বাদশাহ, বান্দা, বেগম, মেথর, রসদ, আদমি, আমদানি, জানোয়ার, জিন্দা, নমুনা, বদমাশ, রফতানি, হাঙ্গামা ইত্যাদি।

🔸 ইংরেজি শব্দ: চেয়ার, টেবিল, পেন, পেন্সিল, ইউনিভার্সিটি, ইউনিয়ন, কলেজ, টিন, নভেল, নোট, নোট, পাউডার, ব্যাগ, ফুটবল, মাস্টার, লাইব্রেরি, স্কুল, ব্যাংক, স্কুল (school), বাক্স (box), হাসপাতাল (hospital), বোতল (bottle), ডাক্তার (doctor), ইংরেজি (English) ইত্যাদি।

🔸 পর্তুগিজ শব্দ: আনারস, আলপিন, আলমারি, গির্জা, গুদাম, চাবি, পাউরুটি, পাদ্রি, বালতি।

🔸 ফরাসি শব্দ: কার্তুজ, কুপন , ডিপো, রেস্তোরাঁ।

🔸 ওলন্দাজ শব্দ: ইস্কাবন, টেক্কা, তুরুপ, রুইতন, হরতন (তাসের নাম)

🔸 গুজরাটি শব্দ : হরতাল৷

🔸 পাঞ্জাবি শব্দ: চড্ডি, শিখ।

🔸 তুর্কি শব্দ : চাকর, চাকু, তোপ, তঙ্গা, বাবা৷

🔸 চীনা শব্দ: চা, চিনি, লুচি, সাম্পান।

🔸 মায়ানমার/ বর্মি শব্দ: ফুঙ্গি, লুঙ্গি।

🔸 জাপানি শব্দ: রিক্সা, হারাকিরি, সুনামি, ইত্যাদি।

🔸 হিন্দি শব্দ: কমসেকম, চলতি, দেবদাস ইত্যাদি।


📌 মিশ্র শব্দ:
🔸 রাজা-বাদশা (তৎসম+ফার্সি),
🔸 হাটবাজার (বাংলা+ফার্সি),
🔸 হেড-মৌলভি (ইংরেজি+ফার্সি),
🔸 হেড-পণ্ডিত (ইংরেজি+তৎসম),
🔸 খ্রিস্টাব্দ (ইংরেজি+তৎসম),
🔸 ডাক্তারখানা (ইংরেজি+ফারসি),
🔸 পকেটমার (ইংরেজি+বাংলা),
🔸 শাকসবজি (তৎসম+ ফারসি)।


📌 গঠন অনুসারে শ্রেণিবিন্যাস
  1. মৌলিক শব্দ: যে -সব শব্দকে বিশ্লেষণ করলে আর কোন শব্দ পাওয়া যায় না, তাকে মৌলিক শব্দ বলে। অর্থাৎ, যে সব শব্দকে ভাঙলে আর কোন অর্থসঙ্গতিপূর্ণ শব্দ পাওয়া যায় না, তাকে মৌলিক শব্দ বলে। যেমন: গোলাপ, নাক, লাল, তিন, ইত্যাদি।

  2. সাধিত শব্দ: যে সব শব্দকে বিশ্লেষণ করলে অর্থসঙ্গতিপূর্ণ ভিন্ন একটি শব্দ পাওয়া যায়, তাদেরকে সাধিত শব্দ বলে। মূলত, মৌলিক শব্দ থেকেই বিভিন্ন ব্যাকরণসিদ্ধ প্রক্রিয়ায় সাধিত শব্দ গঠিত হয়।

মৌলিক শব্দ সমাসবদ্ধ হয়ে কিংবা প্রত্যয় বা উপসর্গ যুক্ত হয়ে সাধিত শব্দ গঠিত হয়। যেমন:

🔸 সমাসবদ্ধ হয়ে - চাঁদের মত মুখ = চাঁদমুখ
🔸 প্রত্যয় সাধিত - ডুব+উরি = ডুবুরি
🔸 উপসর্গযোগে - প্র+শাসন = প্রশাসন


📌 অর্থমূলক শ্রেণিবিন্যাস
  1. যৌগিক শব্দ: যে-সব শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ও ব্যবহারিক অর্থ একই, তাদের যৌগিক শব্দ বলে। অর্থাৎ, শব্দগঠনের প্রক্রিয়ায় যাদের অর্থ পরিবর্তিত হয় না, তাদেরকে যৌগিক শব্দ বলে। যেমন:

🔸 গায়কের কর্তব্য বাবুয়ানা ঢঙে মধুর সুরে দৌহিত্রকে চিকামারা গান শোনানো।
🔸 মূল শব্দ শব্দ গঠন (অর্থ) অর্থ
🔸 গায়ক=গৈ+অক- গান করে যে।
🔸 কর্তব্য=কৃ+তব্য- যা করা উচিত।
🔸 বাবুয়ানা=বাবু+আনা- বাবুর ভাব।
🔸 মধুর=মধু+র- মধুর মতো মিষ্টি গুণযুক্ত।
🔸 দৌহিত্র=দুহিতা+ষ্ণ্য- (দুহিতা= মেয়ে, ষ্ণ্য= পুত্র) কন্যার পুত্র, নাতি।
🔸 চিকামারা=চিকা+মারা- দেওয়ালের লিখন।


  1. রূঢ়ি শব্দ: যেসব শব্দের প্রকৃতি-প্রত্যয় জাত অর্থ এবং ব্যবহারিক অর্থ পৃথক হয় বরং লোক প্রচলিত অর্থ ব্যবহারিক অর্থ হিসেবে প্রকাশ পায় তাকে রূঢ়ি শব্দ বলে। প্রচলিত অর্থই রূঢ়ি অর্থ। যেমন:

🔸 প্রবীণ ব্যক্তি হস্তীতে চড়ে তৈল নিয়ে গবেষণা করে সন্দেশ বানিয়ে বাঁশি বাজায়।
🔸 হস্তী=হস্ত+ইন,(হাত আছে যার;গঠনগত অর্থ) কিন্তু হস্তী বলতে একটি পশুকে বোঝায়।
🔸 গবেষণা=গো+এষণা (গো=গরু, এষণা=খোঁজা) ব্যাপক অধ্যয়ন ও পর্যালোচনা।
🔸 বাঁশি=বাঁশ+ইন,(বাঁশ দিয়ে তৈরি) বাঁশের তৈরি বিশেষ বাদ্যযন্ত্র।
🔸 তৈল=তিল+ষ্ণ্য, (তিল থেকে তৈরি স্নেহ পদার্থ) উদ্ভিদ থেকে তৈরি যে কোন স্নেহ পদার্থ।
🔸 প্রবীণ=প্র+বীণা (প্রকৃষ্টরূপে বীণা বাজায় যিনি) অভিজ্ঞ বয়স্ক ব্যক্তি।
🔸 সন্দেশ=সম+দেশ (সংবাদ) মিষ্টান্ন বিশেষ


  1. যোগরূঢ় শব্দ: যে সব শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ আর ব্যবহারিক অর্থ সম্পূর্ণ পৃথক নয়,বরং ব‍্যুৎপত্তিগত অর্থ কে অনুসরণ করে ব‍্যবহারিক অর্থ প্রকাশিত হয় , তাকে যোগরূঢ় শব্দ বলে।

অথবা, সমাস নিষ্পন্ন যে সকল শব্দ সম্পূর্ণভাবে সমস্যমান পদসমূহের অনুগামী না হয়ে কোনো বিশিষ্ট অর্থ গ্রহণ করে, তাদের যোগরূঢ় শব্দ বলে। প্রসিদ্ধ অর্থই যোগরূঢ় অর্থ। যেমন:

🔸 পঙ্কজ-পঙ্কে জন্মে যা (পদ্মফুল)
🔸 রাজপুত-রাজার পুত্র, (ভারতের একটি জাতি বিশেষ)
🔸 মহাযাত্রা-মহাসমারোহে যাত্রা (মৃত্যু)
🔸 জলধি-জল ধারণ করে যা/এমন (সাগর)


Last updated on