🔖 কারক কাকে বলে?
বাক্যস্থিত ক্রিয়াপদের সঙ্গে নামপদের যে সম্পর্ক থাকে তাকে কারক বলে।
📌 কারকের প্রকারভেদ
🔸 কর্তৃকারক
🔸 কর্ম কারক
🔸 করণ কারক
🔸 সম্প্রদান কারক
🔸 অপাদান কারক
🔸 অধিকরণ কারক
📌 বিভক্তি কাকে বলে?
বাক্যস্থিত একটি শব্দের সঙ্গে অন্য শব্দের অন্বয় সাধনের জন্য শব্দের সঙ্গে যে সকল বর্ণ যুক্ত হয় তাদের বিভক্তি বলে।
উদাহরণ: ছাদে বসে মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন।
🔸 ছাদে (ছাদ + এ বিভক্তি)
🔸 মা (মা + ০ বিভক্তি)
🔸 শিশুকে (শিশু + কে বিভক্তি)
🔸 চাঁদ (চাঁদ + ০ বিভক্তি)
📌 বাংলা শব্দ বিভক্তি
০ (শূন্য বিভক্তি), এ, (য়), তে (এ), কে, রে, র, এরা– এ কয়টিই খাঁটি বাংলা শব্দ বিভক্তি।
📌 বিভক্তির আকৃতি
একবচন এবং বহুবচন ভেদে বিভক্তির আকৃতিগত পার্থক্য দেখা যায়:
বিভক্তি | একবচন | বহুবচন |
---|---|---|
প্রথমা | ০, অ, এ, (য়), তে | রা, এরা, গুলো, গণ |
দ্বিতীয়া | কে, রে, এরে | দিগে, দিগকে, দের |
তৃতীয়া | দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক | দের, দিয়া, দিগকে দ্বারা, দিগ কর্তৃক |
চতুর্থী | দ্বিতীয়ার মতো, জন্য, নিমিত্ত | দ্বিতীয়ার মতো |
পঞ্চমী | হইতে, থেকে, চেয়ে, হতে | দের হইতে, দিগের চেয়ে |
ষষ্ঠী | র, এর | দিগের, দের, গুলির |
সপ্তমী | এ, (য়), তে, এতে | দিগে, দিগেতে, গুলিতে |
📌 কারকের বিস্তারিত আলোচনা
📌 কর্তৃকারক
বাক্যস্থিত যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে কর্তৃকারক বলে।
উদাহরণ: মেয়েরা ফুল তোলে।
কর্তৃকারকের প্রকারভেদ
🔸 মুখ্য কর্তা: যে নিজে নিজেই ক্রিয়া সম্পাদন করে।
🔸 প্রযোজক কর্তা: অন্যকে দিয়ে কাজ করায়।
🔸 প্রযোজ্য কর্তা: যাকে দিয়ে কাজ সম্পন্ন করা হয়।
🔸 ব্যতিহার কর্তা: একাধিক কর্তা একই ক্রিয়া সম্পন্ন করলে।
বাক্যের বাচ্য বা প্রকাশভঙ্গি অনুসারে কর্তা তিন রকম হতে পারে।
🔸 কর্মবাচ্যের কর্তা (কর্মপদের প্রাধান্যসূচক বাক্যে): পুলিশ দ্বারা চোর ধৃত হয়েছে।
🔸 ভাববাচ্যের কর্তা (ক্রিয়ার প্রাধান্যসূচক বাক্যে): আমার যাওয়া হবে না।
🔸 কর্ম-কর্তৃবাচ্যের কর্তা (বাক্যে কর্মপদই কর্তৃস্থানীয়): বাঁশি বাজে।
📌 কর্মকারক
যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে কর্মকারক বলে। কর্ম দুই প্রকার:
🔸 মুখ্যকর্ম
🔸 গৌণকর্ম
সাধারণত মুখ্যকর্ম বস্তুবাচক ও গৌণকর্ম প্রাণিবাচক হয়ে থাকে।
📌 করণ কারক
ক্রিয়া সম্পাদনের যন্ত্র, উপকরণ বা সহায়ককে করণ কারক বলা হয়।
📌 সম্প্রদান কারক
যাকে স্বত্ব ত্যাগ করে দান, অর্চনা, সাহায্য ইত্যাদি করা হয় তাকে সম্প্রদান কারক বলে।
📌 অপাদান কারক
যা থেকে কিছু বিচ্যুত, গৃহীত, জাত, বিরত, আরম্ভ, দূরীভূত ও রক্ষিত হয় তাকেই অপাদান কারক বলে।
অপাদান কারকের উদাহরণ:
🔸 বিচ্যুত: গাছ থেকে পাতা পড়ে।
🔸 গৃহীত: শুক্তি থেকে মুক্তো মেলে।
🔸 জাত: জমি থেকে ফসল পাই।
🔸 বিরত: পাপে বিরত হও।
🔸 দূরীভূত: দেশ থেকে পঙ্গপাল চলে গেছে।
🔸 রক্ষিত: বিপদ থেকে বাঁচাও।
🔸 আরম্ভ: সোমবার থেকে পরীক্ষা শুরু।
🔸 ভীত: বাঘকে ভয় পায় না কে?
📌 অধিকরণ কারক
ক্রিয়া সম্পাদনের কাল (সময়) এবং আধারকে অধিকরণ কারক বলে।
অধিকরণ কারকের প্রকারভেদ
🔸 কালাধিকরণ: সময় বুঝালে। (প্রভাতে সূর্য উঠে।)
🔸 ভাবাধিকরণ: ভাব প্রকাশ করলে। (রাকিব অঙ্কে কাঁচা কিন্তু ব্যাকরণে ভালো।)
🔸 আধারাধিকরণ:
🔸 ঐকদেশিক: পুকুরে মাছ আছে।
🔸 অভিব্যাপক: তিলে তৈল আছে।
🔸 বৈষয়িক: রাকিব অঙ্কে কাঁচা কিন্তু ব্যাকরণে ভালো।
📌 সম্বন্ধ পদ
যে নামপদ বাক্যস্থিত অন্য পদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হয় তাকে সম্বন্ধ পদ বলে।
উদাহরণ: মতিনের ভাই বাড়ি যাবে।
সম্বন্ধ পদের প্রকারভেদ
🔸 হেতু সম্বন্ধ: ধনের অহংকার।
🔸 ব্যাপ্তি সম্বন্ধ: রোজার ছুটি।
🔸 ক্রম সম্বন্ধ: পাঁচের পৃষ্ঠা।
🔸 অংশ সম্বন্ধ: হাতির দাঁত।
🔸 ব্যবসায় সম্বন্ধ: পাটের গুদাম।
🔸 ভগ্নাংশ সম্বন্ধ: একের তিন।
🔸 কৃতি সম্বন্ধ: নজরুলের অগ্নিবীণা।
কারক সম্বন্ধ:
🔸 কর্তৃ সম্বন্ধ: রাজার হুকুম।
🔸 কর্ম সম্বন্ধ: প্রভুর সেবা।
🔸 অপাদান সম্বন্ধ: বাঘের ভয়।
🔸 অধিকরণ সম্বন্ধ: ক্ষেতের ধান।
📌 সম্বোধন পদ
যাকে সম্বোধন বা আহ্বান করে কিছু বলা হয় তাকে সম্বোধন পদ বলে।
উদাহরণ: ওহে মাঝি, আমাকে পার করো।
সম্বোধন পদ বাক্যের অংশ হলেও, এটি কারকের অংশ নয়।